উত্তরদিনাজপুর

রেজিস্টারের খাতায় নামে বিভ্রান্তি, সদ্যজাত শিশু বদলের অভিযোগ হাসপাতালের বিরুদ্ধে

হাসপাতালের রেজিস্টারের খাতায় নামের বিভ্রান্তির জেরে সদ্যজাত শিশু বদলের অভিযোগ উঠলো উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালের বিরুদ্ধে। রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্তে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।

জানা গিয়েছে গত ৬ই জুন বিহারের কাটিহার জেলার ঘরাটিয়া এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার আলমের স্ত্রী সাবানা খাতুন গর্ভবতী অবস্থায় রায়গঞ্জ সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্ত্তি হন। রাত আটটার নাগাদ একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেয় সাবানা খাতুন। পরবর্তীতে সাবানা খাতুন ও তার পু্ত্র সন্তানের অবস্থা খারাপ হলে সাবানাকে আই.সি.ইউ ও তার সদ্যজাত শিশুকে এস.এন.সি.ইউ-তে রাখা হয়। অন্যদিকে এস.এন.সি.ইউ-তে ১৫ নম্বর বেডে সাবিনা খাতুন নামে এক রোগীর সদ্যজাত শিশু ভর্তি ছিল। সাবানা খাতুনের পরিবারের অভিযোগ, বারংবার তাদের সদ্যজাত শিশুর অবস্থা কেমন আছে জানতে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। এমন করতে করতে তিনদিন পেরিয়ে যাবার পর রবিবার পুনরায় সাবানা খাতুনের পরিবার শিশুর অবস্থা জানতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায় গত ৮ ই জুন তাদের শিশু মারা গিয়েছে। এরপর সাবানার পরিবার মৃত শিশুর দেহ তাদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দাবী জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানায় শিশুর মৃতদেহ সাবানার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর সাবানার পরিবার জানায় তারা কোন শিশুর মৃতদেহ পাননি। পরে হাসপাতালের রেজিট্রার খাতা দেখে জানতে পারে সাবানা খাতুনের পরিবারের জায়গায় সাবিনা খাতুনের পরিবারের হাতে তুলে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মৃত শিশুকে নিয়ে নিজের সন্তান ভেবে সাবিনা নিয়ে চলে যান নিজের বাড়িতে। এই ঘটনার পর সাবানার বাড়ির পক্ষ থেকে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে রায়গঞ্জ থানার আই সি সুমন্ত বিশ্বাস রায়গঞ্জ হাসপাতালে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নামের বিভ্রান্তির জেরেই এই শিশু বদলের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে সাবিনা খাতুন যে মৃতশিশু নিয়ে বাড়ি গিয়েছে সেই সদ্যজাত শিশু সবানা খাতুনের। সাবিনার শিশু হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ নম্বর বেডে রয়েছে। এই ঘটনার জেরে আলোরন ছরায় রায়গঞ্জ শহর জুড়ে। প্রশ্ন উঠেছে কিভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজনের শিশুকে আর একজনের হাতে তুলে দিচ্ছে।

এই ঘটনায় পরিবারের এক সদস্য আনসার আলম জানান, প্রসব যন্ত্রনা নিয়ে ভাইয়ের বউকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর দুজনকেই আই.সি.ইউ ও এস.এন.সি.ইউ-তে ভর্তি করা হয়। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের সন্তানের সঙ্গে দেখা করতে দেয়না। খারাপ ব্যবহার করে। প্রায় তিন দিন পর  হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের সন্তান মারা গেছে শুধু তাই নয় মৃত সন্তান তাদের হাতে তুলেও দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করে। এই ঘটনায় তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ জানায়।